সিটি ব্যাংক বাইক লোন সম্পর্কে A টু Z ধারণা।
সিটি ব্যাংক বাইক লোন বিষয়ক এই আর্টিকেলের মাধ্যমে “বাইক লোন” সম্পর্কৃত আপনাদের যেসব তথ্য জানা প্রয়োজন, সেগুলো বিশদভাবে আলোচনা করা হয়েছে।
City Bank Bike loan নিয়ে লিখা এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ার পর আপনি যেসব বিষয় সম্পর্কে জানতে সক্ষম হবেন তাহলোঃ
- সিটি ব্যাংক বাইক লোন এর আওতায় আপনি কি কি সুবিধা পাচ্ছেন?
- সবাইকি সিটি ব্যাংক বাইক লোন এর জন্য আবেদন করতে পারবেন?
- কেমন হতে পারে আপনার জন্য City Bank Bike Loan Interest Rate?
- কি কি কাগজপত্র জমা দিতে হবে কাঙ্ক্ষিত সিটি ব্যাংক বাইক লোন পেতে?
- City Bank Bike Loan EMI Calculator ব্যবহার করে কেমন হতে পারে মাসিক কিস্তি?
- এবং সবকিছু ঠিক থাকলে সিটি ব্যাংক বাইক লোন এর জন্য কিভাবে যোগাযোগ করবেন?
সিটি ব্যাংক বাইক লোন এর প্রধান বৈশিষ্ট্যসমূহঃ
- বাইকের মূল্য অনুযায়ী আপনি সর্বোচ্চ ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত লোন নেওয়ার সুবিধা পাবেন।
- বাইকের মূল্য যাই হোক না কেনো, বাইকের মূল্য এবং বাইকের রেজিস্ট্রেশন করার জন্য যে খরচ রয়েছে, এই উভয় মিলে যে পরিমাণের টাকা প্রয়োজন তার শতকরা ৮০ ভাগ পর্যন্ত টাকা আপনি সিটি ব্যাংক থেকে লোন হিসেবে উত্তোলন করতে পারবেন।
- তবে, মহিলাদের ক্ষেত্রে রয়েছে বিশেষ সুবিধা, অর্থাৎ মহিলারা চাইলে তাদের বাইক ক্রয় করতে যে পরিমাণ টাকা প্রয়োজন তার ১০০ ভাগ টাকাই ব্যাংক থেকে লোন নিতে পারবেন।
- সিটি ব্যাংক বাইক লোন নেওয়ার পর, আপনার লোন পরিশোধের জন্য সর্বনিম্ন ০৬ মাস থেকে সর্বোচ্চ ৩৬ মাস বা ০৩ বছর পর্যন্ত সময় পাওয়া যাবে।
- লোন প্রেসেসিং এবং তার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তৈরি বাবদ যে খরচ রয়েছে, তা শুধু পুরুষদের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হবে, অর্থাৎ মহিলাদের জন্য এই ধরনের খরচ বহন করার প্রয়োজন নেই।
- একাধিক বাইক কেনার জন্যও সিটি ব্যাংক বাইক লোন এর আবেদন করা যাবে।
- তাছাড়া, আপনার যদি সিটি ব্যাংকে কোন FDR করা থাকে, তাহলে সেই FDR এর বিপরীতে ৯৫ পার্সেন্ট পর্যন্ত লোন উত্তোলন করার সুবিধা পাবেন।
সিটি ব্যাংক বাইক লোন যাদের জন্য প্রযোজ্যঃ
সবাইকি City Bank Bike Loan এর জন্য আবেদন করতে পারবেন? উত্তর হচ্ছেঃ না। এটা খুবই সাধারণ একটি ব্যপার যে, ব্যাংক লোন তাদেরকেই প্রদান করা হয়ে থাকে, যাদের থেকে রিটার্ণ আশা করা যায়।সুতরাং সিটি ব্যাংক বাইক লোন নেওয়ার ক্ষেত্রে নিম্নলিখিত শ্রেণী/পেশার লোকজন গ্রহণযোগ্য হিসেবে বিবেচিত হবেন।
- চাকরিজীবী।
- ব্যবসায়ী।
- বাড়ীর মালিক।
- ফ্রীল্যান্সার।
- ফরেইন রেমিট্যান্স গ্রহীতা।
আরো শর্তসমূহঃ
- চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে মাসিক বেতন সর্বনিম্ন ১৫,০০০ টাকা হতে।
- চাকরিজীবীদের মাসিক বেতন অবশ্যই ব্যাংক এর মাধ্যমে গ্রহণ করতে হবে।
- চাকরির বয়স অবশ্যই নূন্যতম ০১ বছর হতে হবে।
- ব্যবসায়ী এবং বাড়ীর মালিকদের ক্ষেত্রে মাসিক আয় অবশ্যই নূন্যতম ২৫,০০০ টাকা হতে হবে।
- ফ্রীল্যান্সারদের মাসিক আয় ৩০,০০০ টাকা হলে সিটি বাইক ব্যাংক লোন এর জন্য আবেদন করা যাবে।
- ফ্রীল্যান্সার এবং ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে তাদের আয়ের উৎসের বয়স নূন্যতম ০১ বছর হতে হবে।
- এবং যারা গত ০৬ মাস থেকে ফরেইন রেমিট্যান্স গ্রহণ করছেন তারাও এই বাইক লোনের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
সিটি ব্যাংক বাইক লোন এর জন্য আবেদন করতে যেসব কাগজপত্র জমা দিতে হবেঃ
সাধারণ কাগজপত্র যা সকল শ্রেনী/পেশার লোকদের জন্য প্রযোজ্যঃ
- জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি।
- ই-টিন সনদের ফটোকপি।
- তিন কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
- ক্রেতা এবং জামিনদারের স্বাক্ষরসহ ০২ জন জামিনদারের প্রত্যেকের ০২ টি করে ছবি।
চাকরিজীবীদের জন্য সিটি ব্যাংক বাইক লোন পেতে যেসব কাগজপত্র প্রয়োজনঃ
- বিজনেস কার্ড বা অফিস থেকে প্রদত্ত আইডি কার্ডের ফটোকপি।
- মূল স্যালারি সার্টিফিকেট।
- যে ব্যাংকে বেতন গ্রহণ করা হয় সেই ব্যাংক একাউন্টের বিগত ০৩ মাসের স্টেটমেন্ট।
ব্যবসায়ীরা সিটি ব্যাংক বাইক লোন পেতে যেসব কাগজপত্র জমা দিবেনঃ
- আপডেটেড ট্রেড লাইসেন্সের ফটোকপি।
- ব্যবসায়িক প্রয়োজনীয় দলিল, যেমন পার্টনারশীপ ডিড, প্রতিষ্টান ভাড়ার ডিড, কোম্পানি হলে তার জন্য কোম্পানি নিবন্ধন সার্টিফিকেট ইত্যাদি।
- বিগত ০৬ মাসের ব্যবসায়িক ব্যাংক স্টেটমেন্ট।
- বিজনেস কার্ড।
বাড়ী/দোকান/বিল্ডিং এর মালিকদের জন্য যেসব কাগজপত্র আবশ্যকঃ
- প্রোপার্টির মালিকানা প্রমাণ করার জন্য প্রয়োজনীয় দলিলপত্র।
- ইউটিলিটি বিল এর ফটোকপি।
- ভাড়াটিয়াদের সাথে সম্পাদিত ডিড এর ফটোকপি।
- এবং বিগত ছয় মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট।
ফ্রীল্যান্সারদের জন্য সিটি ব্যাংক বাইক লোন নিতে নিম্নের কাগজপত্র প্রয়োজনঃ
- লোন গ্রহীতা বা লোন গ্রহীতার জামিনদারের যেকেউ শহরের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে।
- বিগত ০৩ মাসের কাজের অর্ডার বা মার্কেটপ্লেসের কাজের হিস্ট্রির প্রমাণস্বরূপ ডকুমেন্ট।
- বিগত ০৬ মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট।
ফরেইন রেমিট্যান্স গ্রহীতার ক্ষেত্রে নিম্নলিখিত কাগজপত্র জমা দিতে হবেঃ
- যে ব্যাংকে ফরেইন রেমিট্যান্স গ্রহণ করা হয় সেই ব্যাংক একাউন্টের ০৬ মাসের স্টেটমেন্ট।
- যিনি ফরেইন রেমিট্যান্স প্রেরণ করে থাকেন, উনার পাসপোর্ট, ভিসা এবং ওয়ার্ক পারমিটের ফটোকপি।
- যিনি ফরেইন রেমিট্যান্স প্রেরণ করে থাকেন, উনার এই লোন উত্তোলন করতে সম্মতি আছে কি না তার জন্য উনার সম্মতিপত্রের কপি।
বিভিন্ন ক্যাটাগরি অনুযায়ী City Bank Bike Loan Interest Rate:
- সাধারণ লোন এর ইন্টারেস্ট অর্থাৎ আপনি যদি কোন বিশেষ শ্রেণী বা পেশার লোক না হোন, তাহলে আপনাকে ১২.৯৯% ইন্টারেস্ট প্রদান করতে হবে।
- আপনি যদি একজন মহিলা হয়ে থাকেন, তাহলে আপনাকে সেক্ষেত্রে ১১.৯৯% ইন্টারেস্ট প্রদান করতে হবে।
- যারা রাইড শেয়ারিং করে থাকেন, তাদের জন্য সিটি ব্যাংক বাইক লোন এর ইন্টারেস্ট এর পরিমাণঃ ৯.৯৯%।
- যারা সিটি ব্যাংকে চাকরি করেন, তাদের জন্য রয়েছে বিশেষ সুবিধা, অর্থাৎ তারা মাত্র ৪.৯৪ পার্সেন্ট ইন্টারেস্ট প্রদান করতে হবে।
- তবে বিশেষ ব্র্যান্ডের বাইক কেনার ক্ষেত্রে রয়েছে কিছুটা কম ইন্টারেস্টের পরিমাণ। যেমনঃ হোন্ডা, ইয়ামাহা এবং বাজাজ এর বাইক কেনার ক্ষেত্রে আপনাকে ১১.৯৯ পার্সেন্ট ইন্টারেস্ট প্রদান করতে হবে।
লোন প্রসেসিং বাবদ আর কি কি খরচ হতে পারে তা নিম্নের ছবির মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে।
City Bank Bike Loan EMI Calculator ব্যবহার করে মাসিক কিস্তির পরিমাণঃ
আমরা “হোন্ডা সিবি হর্নেট ১৬০R সিবিএস” এর মূল্য চিন্তা করে আজকের সিটি ব্যাংক বাইক লোন এর মাসিক কিস্তির হিসাব করবো।হোন্ডা সিবি হর্নেট ১৬০R সিবিএস মডেলের মোটরসাইকেলের বর্তমান বাজারমূল্যঃ ২০৬.৫০০ টাকা।
বাইক রেজিস্ট্রেশন ফীঃ ১৮,৭৯০ টাকা।
বাইক রেজিস্ট্রেশন ফীঃ ১৮,৭৯০ টাকা।
বাইক বাবদ মোট টাকার প্রয়োজনঃ ২০৬.৫০০ + ১৮,৭৯০ = ২২৫,২৯০ টাকা।
মোট খরচের ৮০ ভাগ পর্যন্ত যদি লোন উত্তোলন করা যায়, তাহলে হোন্ডা সিবি হর্নেট ১৬০R সিবিএস মডেলের বাইক কেনার জন্য আপনি সর্বোচ্চ ১৮০,২৩০ বা রাউন্ড ফিগার করলে ১৮০,০০০ টাকা লোন উত্তোলন করতে পারবেন।
ধরে নিলাম আপনি উক্ত পরিমাণ টাকা বাইক লোন হিসেবে আগামী ০৩ বছর জন্য উত্তোলন করতে চাচ্ছেন। এবং আপনার লোনের ইন্টারেস্ট এর পরিমাণ হোন্ডা কোম্পানি মোটরসাইকেলের ক্ষেত্রে ১১.৯৯ পার্সেন্ট।
তিন বছরে মোট ৩৬ টি কিস্তিতে যদি আপনি লোন পরিশোধ করতে চান, তাহলে উক্ত পরিমাণ লোন এবং ইন্টারেস্ট হিসাব করে আপনার মাসিক কিস্তির পরিমাণ হবেঃ ৬,৭৯৮.৫ টাকা।
সিটি ব্যাংক বাইক লোন পেতে কাদের সাথে যোগাযোগ করতে হবেঃ
সিটি ব্যাংক বাইক লোন সরাসরি আপনার নিকটস্থ ব্যাংক শাখায় যোগাযোগ করতে পারেন। তবে, আপনি যদি ব্যাংকে সরাসরি না গিয়ে আরো কিছু তথ্য জানতে চান তাহলে নিম্নোক্ত নাম্বারে কল করতে পারেনঃ- দেশ থেকে কল করতে চাইলেঃ🖁১৬২৩৪
- বিদেশ থেকে কল করতে চাইলেঃ🖁+88028331040
আমাদের মন্তব্যঃ
সিটি ব্যাংক বাইক লোন সম্পর্কে যেসব তথ্য আপানাদের মাঝে শেয়ার করার প্রয়োজন রয়েছে, তার সবটুকুই আমরা এই আর্টিকেলে বর্ণনা করা চেষ্টা করেছি। সেই সাথে অতিরিক্ত কোন কিছু জানার থাকলে তার জন্য ব্যাংকের অফিসিয়াল নম্বরও উল্লেখ করা হয়েছে।তবে, ব্যাংকে সরাসরি উপস্থিত না হয়ে কারো সাথে ব্যাক্তিগতভাবে আর্থিক লেনেদেন বা লোন উত্তোলোনের বাহানায় ব্যক্তিগত ডকুমেন্টস আদানপ্রদান করে প্রতারিত হলে সেই দায়ভার একমাত্র আপনারই বহন করতে হবে।
অতএব, যাদের সাথেই যোগাযোগ করেন এবং যে মাধ্যমেই যোগোযোগ করেন, ডকুমেন্ট আদানপ্রদান ও আর্থিক লেনদেনের কাজ অবশ্যই সরাসরি ব্যাংকে গিয়েই সম্পাদন করতে হবে।
আশা করছি সিটি ব্যাংক বাইক লোন এর বৈশিষ্ট্য, যোগ্যতা, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, মাসিক কিস্তির পরিমাণ এসব কিছু আপানাদের মাঝে তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছি।
Tag; City Bank Bike Loan Interest Rate, City Bank Bike loan, City Bank Bike Loan EMI Calculator, সিটি ব্যাংক বাইক লোন, সিটি ব্যাংক বাইক লোন আবেদন, সিটি ব্যাংক বাইক লোন ক্যালকুলেটর।